জীবনের শুরুতে আমরা সবাই নিজের জন্যই বাঁচি—নিজের স্বপ্ন, নিজের চাওয়া, নিজের ভালো লাগা দিয়ে ভরে রাখি প্রতিটা সকাল-সন্ধ্যা। কিন্তু সময় যতই গড়াতে থাকে, ততই আমাদের সেই ‘নিজের’ জায়গাগুলোতে ঢুকে পড়ে অন্যদের উপস্থিতি।
প্রথমে পরিবার, তারপর সমাজ, সম্পর্ক, দায়বদ্ধতা, দায়িত্ব—এক এক করে তারা এসে দখল করে নেয় আমাদের চিন্তা, অনুভূতি, সিদ্ধান্ত এমনকি স্বপ্নগুলোও।
কখন যে কারো খুশির জন্য নিজের ইচ্ছেগুলোকে বিসর্জন দিতে শিখে ফেলি, কখন যে নিজের সুখকে আটকে রেখে অন্যের শান্তির জন্য লড়াই করি, বুঝে উঠতে পারি না।
নিজেকে ধীরে ধীরে এমন এক অবস্থানে নিয়ে যাই, যেখানে আমি থাকি, কিন্তু নিজের জন্য না। আমার হাঁটায় থাকে গন্তব্য, কিন্তু সেটা আমার নয়। আমার হাসিতে থাকে আলোর ঝিলিক, কিন্তু তা আমার আনন্দ থেকে জন্ম নেয় না। আমার ভালো থাকা নির্ভর করে অন্যদের মনের ওপর, আর আমার খারাপ থাকা চাপা পড়ে যায় দায়িত্বের ভারে।
এরপর একটা সময় আসে, যখন আয়নায় তাকালেও নিজের চোখের গভীরে এক ফাঁকা শূন্যতা দেখি।
নিজেকে প্রশ্ন করি—"আমি এখনো আছি তো?"
উত্তর আসে, "হ্যাঁ, আছো… কিন্তু নিজের জন্য নও।"
এমন জীবন কি সত্যিই পূর্ণ জীবন?
নিজেকে হারিয়ে দিয়ে কেবল অন্যের জন্য বাঁচা, এটা কি আত্মত্যাগ? নাকি আত্মবিসর্জন?
আমরা ভুলে যাই—নিজেকে ভালোবাসা, নিজের প্রয়োজনগুলো গুরুত্ব দেওয়া, নিজের স্বপ্নকে আঁকড়ে ধরা কোনো স্বার্থপরতা নয়। এটা এক ধরণের আত্ম-সম্মান, এক ধরণের ন্যায্য অধিকার।
নিজের খালি ভেতর দিয়ে অন্যকে ভরাতে গেলে একসময় নিজেরই আর কিছু অবশিষ্ট থাকে না।
সবকিছুর শেষে বলতে হয় যে, এটাই বাস্তব! হাহাহা!