ঘনঘন চার্জে কি স্মার্টফোনের ক্ষতি হয় ?

ঘনঘন চার্জে কি স্মার্টফোনের ক্ষতি হয় ?



এ প্রশ্ন যদি আপনার মনে এসে থাকে, তবে আপনি একা নন।
অনেকে দেখবেন, দরকার থাকুক বা না থাকুক, চার্জার হাতের নাগালে এলেই তাতে মুঠোফোন লাগিয়ে দেয়। আবার নিয়ম করে ফোনে চার্জের পরিমাণ ২০ থেকে ৮০ শতাংশের মধ্যে রাখে, এমন কিছু মানুষও পাবেন। পূর্ণ চার্জ করলে দ্রুত ব্যাটারি ফুরিয়ে যাবে, এমন বিশ্বাস থেকেই তাঁরা হয়তো এমনটা করেন।
প্রতিবেদনে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস অবশ্য বলেছে, মুঠোফোন চার্জ করায় বেশি খুঁতখুঁতে হলে লাভ যে একেবারে নেই, তা নয়। তবে লাভের গুড় উল্টো পিঁপড়া খেয়ে যেতে পারে।
বিজ্ঞান কী বলে?
মুঠোফোনে চার্জ যেভাবেই করুন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ব্যাটারির পারফরম্যান্স কমতে থাকবে, সেটি ধীরে হোক কিংবা দ্রুত। স্মার্টফোনে সচরাচর লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি থাকে। এক ইলেকট্রোড থেকে আরেক ইলেকট্রোডে চার্জ পরিবহন করে এটি। চার্জ করার সময় আয়ন একদিকে যায়, চার্জ ফুরানোর সময় যায় বিপরীত দিকে। আর আয়ন পরিবহনের ফলে চাপ পড়ে ইলেকট্রোডে। এতে ব্যাটারির আয়ু ফুরায়।
স্মার্টফোন তৈরির প্রতিষ্ঠানগুলো কী বলে?
ফোন চার্জ করার নিয়ম নিয়ে বড় স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো খুব বেশি তথ্য দিতে চায় না। তবে তাদের ওয়েবসাইটে কিছু কিছু বিষয়ে নির্দেশনা আছে।
অ্যাপলের ভাষ্য হলো, আপনার যখন খুশি, তখন ব্যাটারি চার্জ করবেন। আর পুনরায় চার্জ করার আগে একদম চার্জশূন্য করারও কোনো প্রয়োজন নেই। অতিরিক্ত তাপ পরিহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে অ্যাপলের ওয়েবসাইটে। বিশেষ করে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপে বেশিক্ষণ না রাখতে বলা হয়েছে। চার্জ করার সময় প্রয়োজনে আইফোনের কভার খুলে রাখতে হবে।
গুগলের নির্দেশনা অ্যাপলের মতোই: যখন প্রয়োজন, নির্ভাবনায় চার্জ করুন।
স্যামসাং অবশ্য নিয়মিত চার্জ করার পরামর্শ দিয়েছে। ব্যাটারিতে অন্তত ৫০ শতাংশ চার্জ রাখার ব্যাপার পরামর্শ দিয়েছে। আবার পূর্ণ চার্জ হওয়ার পর দীর্ঘক্ষণ চার্জারের সঙ্গে যুক্ত রাখলে ব্যাটারির আয়ু কমতে পারে বলেও উল্লেখ করেছে।
আমাদের নাতিদীর্ঘ আলোচনার সারমর্ম তিনটি
এক, আপনি যত সতর্কতার সঙ্গেই চার্জ করুন না কেন, সময়ের সঙ্গে ব্যাটারির আয়ু কমতে থাকবে।
দুই, মুঠোফোনের চার্জ ২০ থেকে ৮০ শতাংশের মধ্যে রাখা ভালো। এতে প্রয়োজনে বারবার চার্জ করতে হলে করবেন। অনেক বিশেষজ্ঞ বলেছেন, তাতে ক্ষতির কিছু তো নেই-ই, বরং ভালো।
তিন, খুব বেশি ভেবে লাভ নেই। যখন প্রয়োজন হবে, যতবার প্রয়োজন হবে, চার্জ করবেন। কারণ, এক স্মার্টফোন মানুষ খুব বেশি দিন ব্যবহার করে না। বেশি চার্জ করার ফলে ব্যাটারির আয়ু ফুরাতে যত দিন সময় লাগবে, তত দিনে সে ফোন বাতিল করার সময় চলে আসবে। মাঝখান থেকে এত সতর্কতা, এত কিছু চিন্তা করাই সার।


সূত্র: দ্য নিউইয়র্ক টাইমস

শেয়ার করুন

লেখকঃ

সবাইকে আমার প্রযুক্তি পাতায় স্বাগতম, মাহী'স ব্লগে নিয়মিত তথ্য ও প্রযুক্তি এবং টেকনোলজি রিলেটেড সকল ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করা হয়। আমরা চাই এতে আপনারা উপকৃত হোন, তাহলে আমাদের কষ্ট স্বার্থক হবে। আমাদের সাথেই থাকুন, ধন্যবাদ। বিনীত নিবেদকঃ মাহিন মাহবুব উল্লাহ একজন টেক লাভার, ব্লগার, ইউটিউবার এবং সোস্যাল ওয়ার্কার।

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট