বুধবার, ১ জুলাই, ২০২০

🖥কম্পিউটার টিপসঃ রান কমান্ড লিস্ট

🖥কম্পিউটার টিপসঃ রান কমান্ড লিস্ট

কম্পিউটারে Windows অপারেটিং সিষ্টেমে জেনে নিই গুরুত্বপূর্ণ Run Command গুলো



আজকে আমি কম্পিউটারের Run command সর্ম্পকে বলবো, Windows অপারেটিং সিষ্টেমে Start মেনুতে Run command এমন একটি অপশন যা কম্পিউটার ব্যবহার কারীদের বিভিন্ন কাজকে করে তুলে গতিশীল। কম্পিউটারে আমরা যে সকল কাজ করি তার মধ্যে অনেক কাজই এই অপশনটি দ্বারা করা সম্ভব। নিচে কিছু কমান্ডের নাম ও কাজ গুলো উল্লেখ করা হল-

০১. ফোল্ডার প্রপার্টিস = Control Folder

০২. ফন্টস = control fonts

০৩. ফন্টস ফোল্ডার = fonts

০৪. গেম কন্ট্রোলস = joy.cpl

০৫. গ্রুপ পলিসি এডিটর = gpedit.msc

০৬. হেল্প এন্ড সাপোর্ট = helpctr

০৭. হাইপার টার্মিনাল = hypertrm

০৮. Word প্যাড = write

০৯. উইন্ডোস এক্সপি টুর = tourstart

১০. উইন্ডোস ভার্শন = winver

১১. উইন্ডোস মেসেঞ্জার = wsmsgs

১২. উইন্ডোস মিডিয়া প্লেয়ার = wmplayer

১৩. উইন্ডোস মেনেজমেন্ট = wmimgmt.msc

১৪. উইন্ডোস ফায়ারওইয়াল = firewall.cpl

১৫. Windows এক্সপ্লোরার = explorer

১৬. টাস্ক মেনেজার = taslmgr

১৭. টিসিপি টেস্টার = tcptest

১৮. ইউটিলিটি মেনেজার = utilman

১৯. উইন্ডোস এড্রেস বুক = wab

২০. ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার = iexplore

২১. ক্যালকুলেটর = calc

২২. কমান্ড প্রোম্পট = cmd

২৩. কন্ট্রোল প্যানেল = control

২৪. এডমিনিস্ট্রাটিভ টুলস = control admin tools

২৫. ডিস্ক ক্লিনাপ = cleanmgr

২৬. ডিস্ক পার্টিশন মেনেজার = diskpart

২৭. ডিক্স মেনেজমেন্ট = diskmgmmt.msc

২৮. ডিভাইস মেনেজার =devmgmt.msc

২৯. ইউজার একাউন্ট = control userpasswords2

৩০. ডিস্ক চেক = chkdsk

৩১. ডিসপ্লে প্রপারটিজ = control desktop

৩২. ইন্টারনেট প্রপারতিজ = inetcpl.cpl

৩৩. উইন্ডোস লগ অফ = logoff

৩৫. মাইক্রোসফট চ্যাট = winchat

৩৬. উইন্ডোস মুভি মেকার = moviemk

৩৭. মাইক্রোসফট পেইন্ট = mspaint

৩৮. কীবোর্ড প্রপারটিজ = control keyboard

৩৯. মাউস প্রোপার্টিজ = control mouse

৪০. নেট মিটিং = conf

৪১. নোটপ্যাড = notepad

৪২. নেটওয়ার্ক কানেকশন = netsetup.cpl

৪৩. অবজেক্ট পেজ মেকার = packager

৪৪. লোকাল সিকিউরিটি সেটীংস = secpol.msc

৪৫. সার্ভিসেস = services.msc

৪৬. রেজিস্যট্রি এডিটর = regedit

৪৭. রিমোট ডেস্কটপ = mstsc

৪৮. প্রিন্টার এন্ড ফ্যাক্স = control printers

৪৯. পাওয়ার কনফিগারেশন = powercfg.cpl

৫০. ফোন ডায়ালার = dialer

আজ এপর্যন্তই,  ধন্যবাদ সবাইকে  ☺  

মঙ্গলবার, ৩০ জুন, ২০২০

সাবজেক্ট রিভিউঃ 🌟ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং🌟

সাবজেক্ট রিভিউঃ 🌟ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং🌟

ডিপ্লোমা ইন ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিংঃ উচ্চ শিক্ষা, ক্যারিয়ার, দায়িত্ব
🌟ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং🌟



আমাদের আধুনিক জীবনের সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে আছে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স সামগ্রি। বিশ্ব জুড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি এতটাই হয়েছে যে এখন পৃথিবী যেন হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। যেটা আসলে ইলেকট্রনিক্স তথা ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারদের ছাড়া অসম্ভব।  ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং- এ ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক বর্ণালী গবেষণা  এবং ব্যবহার করে  ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট, ট্রানজিস্টর ইত্যাদি ইলেকট্রনিক ডিভাইসের অ্যাপ্লিকেশন নিয়ে কাজ করা হয়। ইলেকট্রনিক্স  ইঞ্জিনিয়াররা মূলত বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস যেমন- টিভি, ফ্রিজ, মোবাইল ফোন, কম্পিউটার ইত্যাদি ডিজাইন, তৈরি ও ডেভলপ করে। এছাড়া টেলি কমিউনিকেশন, রোবোটিক্স, হার্ডওয়্যার, পাওয়ার ও বৈদ্যুতিক  সরঞ্জাম উৎপাদন ও উন্নয়নের কাজগুলোও তারা করে থাকেন।

⭐ডিপ্লোমা ইন ইলেকট্রনিক্স  ইঞ্জিনিয়ারিংঃ
 ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং-এর একটি শাখা যেখানে ইলেক্ট্রনিক্সের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক জ্ঞান দেয়া হয়। ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং-এ বৈদ্যুতিক বিষয়ক সার্কিট, বৈদ্যুতিক প্রকৌশল উপাদান, পাওয়ার ইলেকট্রনিক্স, এমবেডেড সিস্টেম, উন্নত উপকরণ সিস্টেম, বৈদ্যুতিক এবং ইলেকট্রনিক্স মেশিন এবং পরিমাপ বিষয়গুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। এখানে শিক্ষার্থীরা ইলেকট্রনিক সার্কিট, কম্পিউটার সিস্টেমের ডিজাইন, নিয়ন্ত্রণ এবং বিকাশ সম্পর্কে শিখে।

⭐কোথায় করবেন ডিপ্লোমা ইন ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিংঃ

সারা দেশ জুড়ে ৪৯ টি সরকারি প্রতিষ্ঠানে ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং –এ ডিপ্লোমা করার সুযোগ রয়েছে। এছাড়া ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট, গ্রিন ইউনিভার্সিটি সহ আরও কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং এ ডিপ্লোমা করা যায়।

⭐ভর্তির যোগ্যতাঃ
ডিপ্লোমা ইন ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং -এর চার বছর মেয়াদি আট সেমিস্টারের এই কোর্সে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার পর যে কোন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া সম্ভব। তবে সরকারি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড নীতিমালা প্রয়োগ হয়ে থাকে।

⭐ডিপ্লোমা ইন ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিংএর মানঃ
ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ডিপ্লোমা কোর্সটির মান HSC সার্টিফিকেটের তুলনায় বেশি, তবে একই বিষয়ের বিএসসি ডিগ্রির তুলনায় কম। ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং হল বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং এর প্রবেশিকা স্তর।  

⭐একজন ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারের দায়িত্বঃ
একজন ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারের কাজগুলো বেশ বৈচিত্রপূর্ণ এবং জটিল। তাদের অনেক বড় পরিসরে দ্বায়িত্ব পালন করতে হয়।
• ইঞ্জিনিয়ারিং টেকনিকের সাথে গনিত এবং বিজ্ঞানের সমন্বয় করে টেলি কমুনিকেশন সিস্টেমের ডিজাইন, তৈরি, স্থাপন ও রক্ষনাবেক্ষণ করা।
• বিভিন্ন ক্ষেত্রে  কন্ট্রোল এবং মনিটরের জন্য ব্যবহৃত প্রক্রিয়া, সিস্টেম এবং যন্ত্রাংশের ডিজাইন ও এসব পরিচালনা করা।
• তাপমাত্রা ও চাপ কন্ট্রোল এবং বিভিন্ন ম্যানুফাকচারিং কোম্পানীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য সিস্টেম ডিজাইন ও তা ব্যবহার করা।
• প্রোজেক্ট পরিকল্পনা ও বাজেট  তৈরি করা।
• ইউজার ফ্রেন্ডলি ইন্টারফেস তৈরির জন্য বিবরণ লিখা এবং তাত্ত্বিক ডিজাইন তৈরি করা।
• টেকনিক্যাল রিপোর্ট লিখা এবং টেকনোলজি্র উন্নয়নের সাথে আপ-টু-ডেট থাকা।
• অপারেটিং সিস্টেমের মূল্যায়ন করে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন ও ভুল সংশোধন করা।
• Computer-assisted engineering(CAE) এবং ডিজাইন সফটওয়্যার ও সরঞ্জাম ব্যবহার করে প্রকৌশলের কাজ সম্পাদন করা।
• বাণিজ্যিক, শিল্প, চিকিৎসা, সামরিক, বা বৈজ্ঞানিক অ্যাপ্লিকেশন জন্য ইলেকট্রনিক উপাদান, সফ্টওয়্যার, পণ্য, বা সিস্টেম ডিজাইন করা।
• বৈদ্যুতিক উপাদান এবং সরঞ্জামের প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরীক্ষার পদ্ধতি বিকাশ করা।
• সিস্টেম মূল্যায়ন এবং নকশা পরিবর্তন বা সরঞ্জাম মেরামতের সুপারিশ করা।
• প্রযুক্তিগত কর্মক্ষমতা উন্নত করার জন্য বিভিন্ন যন্ত্রাংশ, সিস্টেম,অ্যাপ্লিকেশনের পরিবর্তন,বিকাশ এবং পরিবর্ধন করা।

⭐ ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারদের কর্মক্ষেত্রঃ
ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারদের কর্মক্ষেত্র বিস্তর পরিধির। বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করার অনেক ক্ষেত্র আছে। সরকারি প্রতিষ্ঠান গুলোর মধ্যে রয়েছে-

• বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড।
• বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার।
• সরকারি হাসপাতালে বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ার।
• পাওয়ার প্লান্ট, ইলেকট্রিক্যাল গ্রীড কোম্পানী।
• বিটিসিএল, অপটিক্যাল ফাইবার কোম্পানী।
• টেলিফোন বোর্ড।
• সরকারী ভোকেশনাল শিক্ষক।
এছাড়া বেসরকারি হাজারো প্রতিষ্ঠানে ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদা অনেক।
• ইলেকট্রনিক্স গুডস কোম্পানী যেমন- মোবাইল ফোন, রেডিও, টিভি, পিসি, ট্যাবলেট এবং এটিএম মেশিন প্রস্তুতকারক কোম্পানী।
• টেলিভিশন চ্যানেল।
• মোবাইল অপারেটর কোম্পানী, কমিউনিকেশন কোম্পানী।
• ইন্ডাষ্ট্রিয়াল অটোমেশন সেক্টরে।
• বৈজ্ঞানিক গবেষণা –  উপগ্রহ, শব্দবিজ্ঞান, অপটিক্স, পদার্থবিদ্যা এবং ন্যানো প্রযুক্তি।
• মেডিকেল ডিভাইস এবং চিকিৎসা যন্ত্র নির্মাতা।
• বিমান এবং মহাকাশ কোম্পানি।
• উৎপাদন খাত – প্রোগ্রামেবল লজিক নিয়ন্ত্রণ (পিএলসি) এবং শিল্প যন্ত্রপাতি ডেভেলপার হিসেবে।

⭐উচ্চ শিক্ষার সুযোগঃ
ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ডিপ্লোমা শেষে একজন শিক্ষার্থী জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বিএসসি করতে পারে বেশ কয়েকটি বিষয়ে। এগুলো হল-
• বিএসসি ইন ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড ইলেক্ট্রিক্যাল
• বিএসসি ইন ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইলেক্ট্রনিক্স
• বিএসসি ইন ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকম্যুনিকেশন
• বিএসসি ইন মেকাট্রনিক্স
• বিএসসি ইন ইন্সট্রমেন্টাল। এছাড়া AMIE সার্টিফিকেট অর্জন করেও প্রফেশনালি বেশ এগিয়ে যেতে পারবে।

⭐একজন ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারের আয়ঃ
ডিপ্লোমা ইন ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সটি সম্পন্নের পর এন্ট্রি লেভেলে প্রতিষ্ঠান ও পদ অনুযায়ী বেতন হতে পারে ২০-৪০ হাজার টাকা। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এটা আরও কম। তবে  অভিজ্ঞতা বাড়ার সাথে সাথে বেতন বাড়তে থাকে।

⭐ক্যারিয়ার হিসেবে ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিংঃ
ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং এমন একটি ক্ষেত্র যেখানে দ্রুত গতির প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের সাথে তাল মিলিয়ে নতুন প্রযুক্তির সাথে সম্পর্কিত গবেষণা ও উন্নয়নে  দক্ষ প্রকৌশলী বন্টন ব্যবস্থার নকশা করার জন্য ইলেকট্রনিক্স প্রকৌশলীদের চাহিদা বেড়েই চলেছে।সোলার অ্যারে, সেমিকন্ডাক্টর এবং যোগাযোগ প্রযুক্তির নতুন উদ্ভাবনের জন্য, দেশের বিদ্যুৎ গ্রিডগুলি আপগ্রেড করার জন্য দরকার ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারের। এছাড়া প্রযুক্তিগত উন্নয়নের সাথে সাথে বাড়ছে বিভিন্ন ইলেকট্রিক গ্যাজেট ব্যবহার, যেগুলোর তৈরী, বিকাশ, উন্নয়ন সবকিছুই হয় এই ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারদের হাতে।  দৈনন্দিন জীবন সহজ থেকে সহজতর হওয়া সম্ভব হচ্ছে ইলেকট্রনিক্সের কারনে। এসব দেখে বোঝা যায় যে, ভবিষ্যৎ- এ ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদা আরও বাড়বে।

তথ্যসূত্রঃ mahbubmahin.blogspot.com এ প্রকাশিত। 





সোমবার, ২৯ জুন, ২০২০

ক্যারিয়ার: ডিপ্লোমা ইন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংঃ উচ্চশিক্ষা, ক্যারিয়ার, দায়িত্ব।

ক্যারিয়ার: ডিপ্লোমা ইন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংঃ উচ্চশিক্ষা, ক্যারিয়ার, দায়িত্ব।



আধুনিক বিশ্বে যে দেশ কম্পিউটার বা ইনফরমেশন টেকনোলজিতে যত উন্নত, সে দেশ ততই বেশি সমৃদ্ধ এবং শক্তিশালী। গত দশকে থেকে আমাদের দেশেও কম্পিউটারাইজেশনের ক্ষেত্রে বিপ্লবী পরিবর্তন শুরু হয়েছে। শিল্প, সাহিত্য, ব্যাংক, বীমা, শিল্প ও কারখানাগুলিতে অধিক হারে কম্পিউটারের ব্যবহারের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। যে কোন ধরনের ছোট-বড় প্রতিষ্ঠান বা শিল্পে তথ্য সংরক্ষণ ও বিভিন্ন কর্মকান্ড সুষ্ঠভাবে পরিচালনার জন্য কম্পিউটার অত্যাবশ্যক। আমাদের দৈনন্দিন জীবনেও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে কম্পিউটারের প্রতি নির্ভরশীলতা বাড়ছে। যার প্রেক্ষিতে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারদের ব্যপক কর্মসংস্থানের সৃ্ষ্টি হচ্ছে।

🌟ডিপ্লোমা ইন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংঃ
কম্পিউটার প্রকৌশল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর সেই শাখা যা কম্পিউটারের সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যারের গবেষণা এবং বিকাশ নিয়ে কাজ করে। একে বলা যেতে পারে ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার সাইন্স এবং ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং-এর  সামষ্ঠিক জ্ঞান।
ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের এই শাখায় আলোচিত আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের মধ্যে রয়েছে- মাইক্রোকন্ট্রোলার, মাইক্রোপ্রসেসর, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড টেস্টিং, সার্কিট ডিজাইন, হার্ডওয়্যার এবং নেটওয়ার্কিং।

কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংঃ
-এ ডিপ্লোমা সম্পন্ন করার পর শিক্ষার্থীরা নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী সফটওয়্যার কিংবা হার্ডওয়্যার এঞ্জিনিয়ারিং-এ ক্যারিয়ার বেছে নিতে পারে উপযুক্ত দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে।

কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং- ডিপ্লোমা কোথায় করবেনঃ
দেশের বিভিন্ন জেলায় ৪৯ টি সরকারি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং –এ ডিপ্লোমা করার সুযোগ রয়েছে। এছাড়া বেশ কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যেমন- ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট, BCI – তেও কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এ ডিপ্লোমা করা যায়।

ভর্তির যোগ্যতাঃ

চার বছর মেয়াদি আট সেমিস্টারের এই কোর্সে ভর্তি হতে হলে প্রার্থীকে কমপক্ষে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার উত্তীর্ণ হতে হবে। যে কোন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা ইন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ভর্তি হওয়ার জন্য কারিগরি শিক্ষা বোর্ড নীতিমালা দিয়ে থাকে। সাধারণত সরকারি পলিটেকনিকের ক্ষেত্রে নূনতম ৩.৫ তবে গণিতে এবং বিজ্ঞানে ভাল থাকতে হবে এবং বেসরকারি ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট করে আমাদের জানা নেই।

ডিপ্লোমা ইন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এর মানঃ

ডিপ্লোমা ইন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং হল একটি আন্ডার গ্রাজুয়েশন কোর্স। যদিও এর মান এইচ এস সি- এর তুলনায় বেশি, কিন্তু এটা গ্রাজুয়েশনের সমান না।

একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারের দায়িত্বঃ


একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার-এর মধ্যে যেকোনো একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হতে পারে। কম্পিউটার প্রকৌশলীদের প্রধান কাজ হল কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার অথবা সফটওয়্যারের ডিজাইন, পরিকল্পনা, যাচাইকরণ এবং তত্ত্বাবধান করা।
কম্পিউটার প্রকৌশলীদের মধ্যে কেউ কেউ প্রধানত কম্পিউটার হার্ডওয়্যারের সিস্টেম ও অবকাঠামো নির্মাণে কাজ করে এবং অন্যান্যরা সফটওয়্যার নিয়ে কাজ করে যেটা কিনা পুরো সিস্টেমের মধ্যে ব্যবহার করে কোন কাজ সম্পন্ন করা হয়। কম্পিউটার প্রকৌশলের ক্ষেত্র হার্ডওয়্যার প্রকৌশলী এবং সফ্টওয়্যার ডেভেলপার উভয়ের জন্য ভিন্ন চাকরির ক্ষেত্র থাকলেও অনেক কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়াররা  কোন একটি প্রতিষ্ঠানে হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার উভয়ের সমন্বিত সিস্টেম নিয়ে  কাজ করতে পারে।
একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার যেসব পদের দায়িত্ব পালন করে থাকেন সেগুলো হল-

• 
সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার
• হার্ডওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার
• প্রোগ্রামার
• নেটওয়ার্কিং ইঞ্জিনিয়ার
• নেটওয়ার্কিং ইঞ্জিনিয়ার
• সফটওয়্যার টেস্টার
• ওয়েব ডিজাইনার
• অ্যাপ ডেভ্লপার
• প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার
• টেকনিক্যাল রাইটার
• সিস্টেম এনালিস্ট
• ডাটাবেস ইঞ্জিনিয়ার
• ক্লাউড আর্কিটেক্ট

কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারের কর্মক্ষেত্রঃ
বর্তমানে বাংলাদেশে ডিজিটালাইজেশনের কারনে সব ধরনের প্রতিষ্ঠানেই রয়েছে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদা, সেরকম কিছু প্রতিষ্ঠান হল-

• পাওয়ার প্লান্ট, পিডিবি, পল্লী বিদ্যুৎ, ডেসকো, ওয়াসাসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান।
• ইনফরমেশন এ্যান্ড কম্যুনিকেশন টেকনোলজি সেক্টর।
• সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক ও বিমা কোম্পানিগুলোতে মেনটেইন্যান্স ও আইটি অফিসার হিসেবে।
• সৌর বিদ্যুৎ ও পরমাণু গবেষণাকেন্দ্র। 
• শিল্প-কারখানা, গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি।
• ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস সেক্টর।
• কম্পিউটার ইন্ডাস্ট্রি।
• টেলিকম্যুনিকেশন সেক্টর।
• ই-কমার্স সেক্টর।
• বায়োটেকনোলজি সেক্টর।
• বিভিন্ন প্রিন্ট এবং ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়া।
• সরকারি ও বেসরকারি পলিটেকনিক প্রতিষ্ঠানসমূহ।

উচ্চ শিক্ষাঃ
কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ডিপ্লোমা সম্পন্ন করার পর সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে যে সকল সেক্টরে   উচ্চতর শিক্ষার সুযোগ আছে সেগুলো হল-

• 
কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং
• B.sc ইনফরমেশন অ্যান্ড কম্পিউটার টেকনোলজি
• B.sc ইনফরমেশন অ্যান্ড কম্পিউটার টেকনোলজি
• B.sc ইনফরমেশন সাইন্স
• B.sc ডাটা ইনফরমেশন অ্যান্ড টেকনোলজি
• B.sc কম্পিউটার সাইন্স
• সফটঅয়্যার  ইঞ্জিনিয়ারিং
• মাল্টিমিডিয়া টেকনোলজি

এছাড়া দেশের বাইরেও এসকল বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা লাভ করা সম্ভব।  


ক্যারিয়ার হিসেবে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংঃ
আজকাল বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান এবং সংস্থাগুলি  যেমন পাওয়ার সেক্টর, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, উৎপাদন ইত্যাদি কম্পিউটারের উপর নির্ভরশীল।  এই সকল প্রতিষ্ঠান গুলোতে কম্পিউটার সিস্টেমের উন্নয়ন, রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের জন্য  কম্পিউটার প্রকৌশলীদের  ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বর্তমানে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, কল-কারখানা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সব জায়গাতেই কমপিউটার নির্ভর ব্যবস্থাপনা। ফলে প্রতিটি দফতর, শিল্পে আইটি এক্সপার্ট এবং কম্পিউটার প্রকৌশলী অত্যাবশ্যক হয়ে দাড়িয়েছে। কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ডিপ্লোমা হোল্ডারা সফটওয়্যার বা হার্ডওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে এসব প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে পারে।
 তবে, বর্তমানে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদা হার্ডওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের তুলনায় বেশি। সফটওয়্যার সাধারনত হার্ডওয়্যারের তুলনায় ঘনঘন আপডেট হয়ে থাকে, এটিই সম্ভাব্য কারন। একই হার্ডওয়্যারে কাজ করার জন্য সফটওয়্যার প্রোগ্রামের বেশ কয়েকটি সংস্করণ ব্যবহার করা হয়। অন্যদিকে হার্ডওয়্যারগুলো ভালভাবে কাজ করে থাকলে প্রতিষ্ঠান হার্ডওয়ার আপগ্রেড করার জন্য তেমন কোন উদ্যোগ নেয় না।
আউটসোর্সিং- এর মাধ্যমে আয় ইদানিং বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে, যেখানে কম্পিউ্টার সম্পর্কিত সেবা একটি বড় স্থান দখল করে আছে।
এছাড়া আত্ম কর্মসংস্থানের জন্য কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং খুবই সম্ভাবনাময় সেক্টর। একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এ ডিপ্লোমাধারী স্বাধীন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার  হিসেবে কাজ করতে পারেন অথবা নিজের হার্ডওয়্যার বিক্রয় ও সার্ভিসিং-এর প্রতিষ্ঠান খুলতে পারেন।
কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারের আয়
ডিপ্লোমা করার পর পরই যদি কেউ চাকরিতে ঢুকতে চায়, তবে এই লেভেলে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বেতন হতে পারে ২০-২৫ হাজার টাকা।
তবে যদি হার্ডঅয়্যার বা সফটঅয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং-এর উপর অ্যাডভান্স লেভেলের ডিগ্রি এবং অভিজ্ঞতা থাকে তবে বেতন অনেক ভাল হয়। আন্তর্জাতিক বাজারে যা আরও অনেক বেশি হয়ে থাকে।
কম্পিউটার টেকনোলজি উন্নতির ফলে আমাদের দেশে বহুমুখী কর্মসংস্থানের সুযোগ বেড়েছে। তথ্য প্রযুক্তি তথা কম্পিউটার প্রকৌশলে  শিক্ষিত তরুণদের  অনেকেই দেশ ও বিদেশে সম্মানজনক পেশায় জড়িত আছে। এর দেশে শিক্ষিত বেকার সমস্যা কিছু্টা হলেও লাঘব হয়েছে। তবে, প্রযুক্তি এত দ্রুত গতিতে বিকশিত হচ্ছে যে কম্পিউটার প্রকৌশল ক্ষেত্রটি অনেকগুলি পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। কম্পিউটার প্রকৌশলীকে এই ধরনের বিকাশের সাথে নিজেকে আপ টু ডেট রাখতে হবে। সংক্ষেপে, ডিপ্লোমা ইন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়্যারিং- তাদের জন্য যারা অবিরাম শেখার জন্য প্রস্তুত।
 তথ্যসূত্র : Polytechnicbd.com  এ প্রকাশিত।