বৃহস্পতিবার, ২৩ জুলাই, ২০২০

সুপার কম্পিউটার কি ?  সুপার কম্পিউটারের কাজ কি?     – বিস্তারিত ব্যাখ্যাঃ

সুপার কম্পিউটার কি ? সুপার কম্পিউটারের কাজ কি? – বিস্তারিত ব্যাখ্যাঃ

সুপার কম্পিউটার কি ?  সুপার কম্পিউটারের কাজ কি?
 – বিস্তারিত ব্যাখ্যাঃ


কম্পিউটার” শব্দটির সাথে আমরা খুব বেশি পরিচিত হলেও “সুপারকম্পিউটার” শব্দটি আমরা খুব কমই শুনেছি। অথবা খুব বেশি কিছু জানিও না। চলুন জেনে নেওয়া যাক অতিমাত্রায় শক্তিশালী এই কম্পিউটার সম্পর্কে।

সংঙ্গা: সাধারণভাবে আমাদের বাসা বাড়িতে বা অফিস আদালতে ব্যাবহৃত ছোট কম্পিউটারগুলো থেকে অনেক বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন এবং বৃহৎ আকারের কম্পিউটারকে সুপারকম্পিউটার বলা হয়।
এরা সাধারন কম্পিউটারগুলো থেকে অত্যন্ত ক্ষমতাসম্পন্ন এবং এদের আকৃতিও অনেক অনেক বড়। গড়ে একেকটি সুপারকম্পিউটার নির্মানে খরচ পড়ে প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার এবং এর এক বছরের রক্ষনাবেক্ষন খরচ ৯ মিলিয়ন ডলার!! “টাইটান” নামের বিশ্বের অন্যতম বড় একটি সুপারকম্পিউটারের আকার প্রায় একটি বাস্কেটবল কোর্টের সমান। সাধারণ কম্পিউটারগুলো যেমন বাজারে কিনতে পাওয়া যায় এগুলো তেমন কিনতে পাওয়া যায় না এবং বিশ্বের খুব কম প্রতিষ্ঠানের কাছেই সুপারকম্পিউটার রয়েছে। বেশিরভাগই সরকার ভিত্তিক এবং বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানে বৃহৎ হিসাবনিকাষে ব্যাবহৃত হয়। এগুলো রক্ষনাবেক্ষনেও প্রচুর খরচের প্রয়োজন পড়ে।

ক্ষমতা: সুপারকম্পিউটার সাধারণ কম্পিউটারগুলোর থেকে অতিমাত্রায় শক্তিশালী হয়ে থাকে। আমরা সাধারনত কোনো কম্পিউটারের গতি মাপার জন্য তাদের প্রসেসর কত হার্ট্জের এবং এটি প্রতি সেকেন্ডে কত মেগাবাইট/গিগাবাইট তথ্য প্রসেস করতে পারে তা নির্নয় করি। কিন্তু সুপারকম্পিউটারদের গতি/ক্ষমতা মাপার জন্য সম্পুর্ন ভিন্ন একটি একক ব্যাবহার করা হয়। এককটি হলো FLOPS(Floating Point Operation Per Second)। এটি প্রচলিত হিসাব পদ্ধতি থেকে সম্পুর্ন ভিন্ন এবং কেবলমাত্র বড় বড় প্রসেসিং মেশিন সমুহের গতি মাপার জন্যই ব্যাবহৃত হয়। চলুন FLOPS একক সম্পর্কে আপনাকে একটু ধারনা দেই- 1gigaFLOPS মানে হলো আপনাকে প্রায় ৩২ বছর ধরে প্রতি সেকেন্ডে একটি করে হিসাব করে যেতে হবে!! কোনো সুপারকম্পিউটার যদি এই কাজটি এক সেকেন্ডে করতে পারে তাহলে তার ক্ষমতা হবে 1gigaFLOPS. এরকমভাবে TeraFLOPS, PetaFLOPS এককগুলোও ব্যাবহার হয়। 1000gigaFLOPS=1TeraFLOPS 1000TeraFLOPS=1PetaFLOPS!! প্রতি সেকেন্ডে ১ টি করে হিসাব করলেও 1 পেটাফ্লপস যেতে আপনার ৩ কোটি বছর লাগবে!!! এপর্যন্ত সবচেয়ে শক্তিশালী সুপারকম্পিউটারটি হলো Sunway TaihuLight এটি চীনে তৈরি এবং এর ক্ষমতা আশ্চর্যজনকভাবে প্রায় ৯৩ পেটাফ্লপস! যেটি এর আগের সবচেয়ে শক্তিশালী সুপারকম্পিউটারটির থেকেও প্রায় তিনগুন বেশি। এখনো এর থেকেও বেশি শক্তিশালী সুপারকম্পিউটার তৈরির চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

ব্যাবহার: সুপারকম্পিউটারের ক্ষমতা সম্পর্কে ভালোই জানা হলো, এবার মনের মধ্যে প্রশ্ন জাগতেই পারে যে এত শক্তিশালী কম্পিউটার দিয়ে কি করা হয়? এদের প্রয়োজনই বা কি? আসলে প্রয়োজন ছাড়া পৃথিবীতে কোন জিনিসই তৈরি হয়না। যেখানে এত ব্যায়বহুল কম্পিউটারগুলোর কথা আসে তখন এদের প্রয়োগক্ষেত্রও কিন্তু বড় বড় জায়গাতেই। সাধারণত গানিতিক বিজ্ঞানে সবচেয়ে বেশি সুপারকম্পিউটার ব্যাবহৃত হয়। গনিতের অনেক বড় বড় হিসাবনিকাশ, বৃহত্তম মৌলিক সংখ্যা বের করা, অনেক বড় এবং সময়সাপেক্ষ অংক খুব কম সময়ের মধ্যে করা ইত্যাদি কাজে সুপারকম্পিউটার ব্যাবহৃত হয়। ল্যাবরেটরিতে গবেষনার কাজে, পদার্থবিজ্ঞানে কোয়ান্টাম মেকানিক্সে, আবহাওয়ার পুর্ভাবাস, জলবায়ু গবেষণা, এটমিক পদার্থবিজ্ঞান ইত্যাদি কাজে সুপারকম্পিউটার ব্যাবহৃত হয়। নাসা, সার্ন(CERN) এর মতো বড় বড় গবেষণা প্রতিষ্ঠান জোতির্বিজ্ঞান এবং মলিকিউলার ফিজিক্সে খুব সুক্ষ হিসাবনিকাশের জন্যও সুপারকম্পিউটার ব্যাবহার করে। পৃথিবীতে কোন দেশে কতটি সুপারকম্পিউটার আছে তা ওই দেশের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন নির্দেশ করে। এক্ষেত্রে আমেরিকা, জাপান এবং চায়না অনেক এগিয়ে আছে। আমাদের পাশ্ববর্তী দেশ ভারতও এগিয়ে যাচ্ছে।

ইতিহাস: পৃথিবীর প্রথম সুপারকম্পিউটার তৈরি করা হয় ১৯৬০ সালে ইউনিভার্সিটি অফ ম্যানচেস্টারে IBM 7030 Stretch এবং CDC(Control Data Corporation) এর কয়েকটি কম্পিউটার দ্বারা যার নাম ছিল অ্যাটলাস(Atlas) এবং এটি নির্মিত হয়েছিল সাইমর ক্রে নামের এক ব্যক্তির দ্বারা। IBM 7030 Stretch হলো ট্রান্সজিস্টর ব্যাবহার করা প্রথম কম্পিউটার। ১৯৬৪ সালে ক্রে CDC-6600 নামের একটি সুপারকম্পিউটার ডিজাইন করেন যা সিলিকন নির্মিত ট্রান্সজিস্টর ব্যাবহার করতো। প্রতিটি কম্পিউটার ৮ মিলিয়ন ডলার করে বিক্রি হয়েছিলো। ১৯৭৬ সালে ক্রে তার নিজের কোম্পানি “ক্রে রিসার্চ” থেকে Cray-1 নামের 80 MHz ক্ষমতাসম্পন্ন একটি কম্পিউটার তৈরি করেন।

ILLIAC IV মডেলটি ক্রে ১ কে টেক্কা দেয় যার সর্বোচ্চ পিক পারফরম্যান্স ছিল 1gigaFLOPS. ১৯৮৫ সালে ক্রে ২ নামের আরেকটি কম্পিউটার আসে যা সর্বোচ্চ 1.9 gigaFLOPS গতিতে প্রসেসিং করতো কিন্তু এটি মস্কোতে অবস্থিত M-13 সুপারকম্পিউটারকে পেছনে ফেলতে পারেনি। মাইক্রোপ্রসেসর আবিষ্কৃত হওয়ায় কম্পিউটার নির্মানে এবং এর গতি বৃদ্ধিতে বিপ্লব সৃষ্টি হয়। ১৯৮২ সালে জাপানে LINKS-1 নামের একটি সুপারকম্পিউটার প্রধানত গ্রাফিক্সের কাজে ব্যাবহার করার জন্য তৈরি করা হয় যাতে একসাথে ৫১৪টি মাইক্রোপ্রসেসর ব্যাবহৃত হয়েছিল। ১৯৯০ এর দিকে জাপান এবং আমেরিকায় হাজার বা এর অধিক মাইক্রোপ্রসেসরযুক্ত সুপারকম্পিউটার নির্মান শুরু হয়। ১৯৯৬ সালে Hitachi SR2201 নামের ২০৪৮ টি প্রসেসরযুক্ত একটি সুপারকম্পিউটার ৬০০ gigaFLOPS গতি তুলতে সক্ষম হয়। এরপর থেকে অতিমাত্রায় সমান্তরাল প্রসেসর যুক্ত সুপারকম্পিউটার নির্মিত হতে থাকে। চায়না, জাপান, রাশিয়া ইত্যাদি দেশ তাদের নিজেদের জন্য শক্তিশালী সুপারকম্পিউটার নির্মানে আগ্রহী হয়ে উঠে। বর্তমানে বিশ্বের সেরা দশটি সুপারকম্পিউটারের মধ্যে ৫টি আমেরিকার, ২টি চীনের, ১টি জাপানের এবং ১টি সুইজারল্যান্ডে অবস্থিত। অবশ্য প্রথম তিনটির মধ্যে দুইটিই চীনের এবং তৃতীয়টি সুইজারল্যান্ডের।

নির্মানব্যায় এবং ব্যাবহৃত শক্তি: গড়ে একেকটি সুপারকম্পিউটার নির্মানে খরচ পড়ে প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার এবং এর এক বছরের রক্ষনাবেক্ষন খরচ ৯ মিলিয়ন ডলার এবং এদের চালু রাখতেও কিন্তু ব্যাপক পরিমানে বিদ্যুতশক্তির প্রয়োজন পড়ে।Tianhe-1A যেটি কিনা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম সুপারকম্পিউটার, এটি চালু রাখার জন্য ৪ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন পড়ে! সুপারকম্পিউটারগুলো রক্ষনাবেক্ষনে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো এদের ব্যাপকহারে তাপ নিঃসরন। একটি কম্পিউটার চালু অবস্থায় প্রচুর তাপ উৎপন্ন করে যা ঠান্ডা করার জন্য ও প্রচুর ফ্যান/এসির প্রয়োজন হয়  এবং এতে প্রচুর বিদ্যুত শক্তির অপচয় ও হয়। যদিও এখন কম তাপ উৎপন্ন করে এমন প্রসেসর নির্মানের চেষ্টা চলছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে লিকুইড কুলিং সিস্টেম ব্যাবহৃত হয় যা ফ্যানের তুলনায় অনেক দ্রুত ঠান্ডা করতে সক্ষম। কিন্তু কম্পিউটারের মতো স্পর্শকাতর যন্ত্র ঠান্ডা করার জন্য পানি ব্যাবহার না করাই ভালো নয় কি?! আইসল্যান্ডে অবস্থিত একটি সুপারকম্পিউটারকে বলা হয় পৃথিবীর প্রথম জিরো এমিশন সুপারকম্পিউটার। এটি শতভাগ নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যাবহার করে এবং আইসল্যান্ডের ঠান্ডা আবহাওয়ার কারনে এটিকে কৃত্রিমভাবে ঠান্ডা করার প্রয়োজন পড়ে না।

অপারেটিং সিস্টেম: প্রথমদিকের সুপারকম্পিউটারগুলো তাদের নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেম ব্যাবহার করলেও ধীরে ধীরে তারা লিনাক্স(Linux) ভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম ব্যাবহার করতে শুরু করে। যেহেতু লিনাক্স একটি ওপেন সোর্স সফটওয়্যার এবং যেকেউ ইচ্ছামতো একে মডিফাই করে ব্যাবহার করতে পারে। সর্বশেষ তথ্যমতে বিশ্বের সেরা ৫০০টি সুপারকম্পিউটারই লিনাক্স ভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম ব্যাবহার করে!!

mahbubmahin.blogspot.com এ প্রকাশিত।   


বুধবার, ২২ জুলাই, ২০২০

ক্লাউড কম্পিউটিং কি  ?

ক্লাউড কম্পিউটিং কি ?

ক্লাউড কম্পিউটিং কি?

ধরুন আপনার এখন ডাটা ভিজুয়ালাইজেশনের জন্য ম্যাটল্যাব সফটওয়্যাটি দরকার কিন্তু আপনার পিসিতে তা নেই । তাই আপনি ইন্টারনেটের মাধ্যমে কোন একটি সার্ভিস প্রভাইডারের কাছে ফ্রি অথবা অর্থের বিনিময়ে কানেক্ট হবেন যা আপনাকে ম্যাটল্যাব সফটওয়্যাটির ইনভাইরনমেন্ট দেবে ব্যবহারের জন্য ।
অথবা, আপনার ১৬/ ৩২ কোর প্রসেসরের প্রসেসিং পাওয়ার দরকার হতে পারে কোন বড় ক্যালকুলেশনের জন্য কিংবা মেশিন লার্নিং এর বড় কোন মডেল রান করার জন্য , যা আপনার / আমার মত গরিবের পক্ষে দিবাস্বপ্নের মত । কিন্তু সেই জন্য কি আমরা মেশিন লার্নিং শিখতে পারবো না ? অবশ্যই পারবো । আর এই জন্য আমরা ক্লাউড কম্পিউটিং এর মাধ্যমে (সাধারন পিসি থেকেই) কমমূল্য দিয়েই (হয়ত ঘন্টা হিসেবে) ঐ সার্ভিস পেতে পারি নেটওয়ার্কের মাধ্যেমে কানেক্টেড থেকে।
এটাই হলো ক্লাউড কম্পিউটিং। এটি একটি ভার্চুয়াল কম্পিউটার। অর্থাৎ কম্পিউটার এর যন্ত্রাংশ আপনি দেখতে পাবেন না কিন্তু যেকোনো স্থান থেকে এবং যেকোনো কম্পিউটিং ডিভাইজ থেকে একে রিমোট কন্ট্রোল এর মতো করে ব্যবহার করতে পারবেন। যেখানে আপনি ইচ্ছা মতো কনফিগারেশন করতে পারবেন এবং সকল উচ্চ মান এর কাজ করতে পারেন ইন্টারনেট সংযোগ এর মাধ্যমে। এখানে আপনি হাজার হাজার তথ্য সংরক্ষন করে রাখতে পারবেন। এমন সব কিছুই করতে পারবেন যা আপনার টেবিলে থাকা কম্পিউটার টি দিয়ে আপনি করেন। আপনার শুধু দরকার হবে একটি  ইন্টারনেট সংযোগ।
তাহলে এককথায় ক্লাউড কম্পিউটিং হলঃ কম্পিউটারের রিসোর্স গুলো মানে হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার এর সার্ভিস গুলো নেটওয়ার্ক এর মাধ্যমে প্রদান করা
ইউজার এর উপর ভিত্তি করে ক্লাউড কম্পিউটিং মূলত ৪ ধরনের হয়ে থাকেঃ
1. Public cloud: এক ধরনের ক্লাউড সার্ভিস যা সাধারন জনগন ব্যবহার করতে পারবে।
2. Private cloud: যেটা শুধু কোন নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের জনগন ব্যবহার করতে পারবে।
3. Hybrid cloud: এটা পাবলিক এবং প্রাইভেট দুইটার সংমিশ্রণে তৈরি।
4. Community cloud: এটা একাধিক প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করতে পারবে।


সার্ভিসের উপর ভিত্তি করে ক্লাউড কম্পিউটিং কে তিন ভাগে ভাগ করা যেতে পারেঃ
1. IaaS (Infrastructure-as-a-Service): এতে অবকাঠামো বা Infrastructure ভাড়া দেয়া হয়। যেমন, কারো যদি একটা মেশিন লাগে তার কাজের জন্য তাহলে ভার্চুয়ালি সেই মেশিন ভাড়া দেয়া হয় কিংবা নেটওয়ার্কিং সেবা দেয়া হয়।
2. PaaS (Platform-as-a-Service): এতে প্লাটফর্ম ভাড়া দেয়া হয়। যেমনঃ অপারেটিং সিস্টেম, ডাটাবেজ কিংবা কোনো সার্ভার বা মনিটরিং সিস্টেম।
3. SaaS (Software-as-a-Service): এটা হচ্ছে ক্লাউডে চলা কোনো সফটওয়ার যেটা ইউজাররা ইন্টারনেটের মাধ্যমে সরাসরি ব্যবহার করতে পারেন তাদের মোবাইল ফোন কিংবা পিসির সাহায্যে। এদের এক কথায় ওয়েব সার্ভিস ও বলা যায়।

ক্লাউড কম্পিউটিং এর সুবিধাঃ
কম খরচঃ যেহেতু এতে আলাদা কোন সফটওয়্যার কেনার প্রয়োজন হয় না বা কোন হার্ডওয়্যার এর প্রয়োজন হয় না। তাই স্বাভাবিক ভাবে খরচ কম হবেই।
সহজে ব্যবহারঃ ক্লাউড কম্পিউটিং এর কাজ গুলো যেকোনো স্থানে বসেই মোবাইলের মাধ্যমে কন্ট্রোল করা যায় তাই এটা সহজে ব্যবহার যোগ্য।
সফটওয়্যার ব্যবহার: ক্লাউড কম্পিউটিং এর মাধ্যমে অনেক উচ্চমান সম্পূর্ণ কাজ করা সম্ভব। এবং প্রয়োজনীয় সকল সফটওয়্যার ব্যবহার করা সম্ভব যা হয়তো আপনাকে আলাদা টাকা দিয়ে কিনতে হতে পারত।
অটো সফটওয়্যার আপডেটঃ ক্লাউড কম্পিউটিং এর সফটওয়্যার গুলো আপনার আপডেট করার প্রয়োজন নেই। এগুলো অটো আপডেট হয়ে থাকে। তাই আলাদা ভাবে এটা মেইনটেন্স এর খরচ লাগে না।
যতটুকু ব্যবহার ততটুকু খরচঃ ক্লাউড কম্পিউটিং এ আপনি যত টুকু ব্যবহার করবেন শুধু মাত্র ততটুকুর জন্য পয়সা আপনাকে দিতে হবে। যেটা কিনা ডেস্কটপ কম্পিউটিং এ সম্ভব না।
ডকুমেন্ট কন্ট্রোলঃ মনে করুন কোন একটা অফিসে যদি ক্লাউড কম্পিউটিং না ব্যবহার করে তবে সেই অফিসের ডকুমেন্ট সমূহ কন্ট্রোল করতে বা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নেবার জন্য আলাদা লোকের প্রয়োজন হবে কিন্তু ক্লাউড কম্পিউটিং এ সেই ধরনের কোন সমস্যা নেই। অতিরিক্ত লোক ছারাই সকল ডকুমেন্ট কন্ট্রোল করা যায়।
ডাটা সংরক্ষন: একসাথে অনেক ডাটা সংরক্ষন করা সম্ভব। এবং সেই ডাটা কখনই হারিয়ে যাবে না বা নষ্ট হয়ে যাবে না। ক্লাউড কম্পিউটিং কোম্পানি গুলোর অনেক ডাটা সেন্টার থাকে। তাই আপনার ডাটা নিয়ে আপনাকে কনো চিন্তা করতে হবে না।
সিকিউরঃ আপনার চেয়ে আপনার ডাটার সিকিউরিটি বেশি আপনি গুম হয়ে যাইতে পারেন যেকোনো মুহূর্তে কিন্তু আপনার ডাটা গুম হওয়ার ভয় নেই। আপনার যদি অনেক বেশি ডাটা থাকে আপনি হয়ত আলাদা হার্ডডিস্ক ব্যবহার করে ব্যাক আপ রাখলেন। কিন্তু সেই হার্ডডিস্ক যে ক্র্যাশ করবেনা সেই গ্যারান্টি নাই। আবার অন্য কোনোভাবেও আপনি ডাটা হারিয়ে ফেলতে পারেন। কিন্তু ক্লাউডে আপনার এই ভয় নেই। আপনার ডাটা রক্ষার গ্যারান্টি ক্লাউড আপনাকে দিবে। সুতরাং এই সুযোগে আপনি নিজের দিকে একটু বেশি খেয়াল রাখার সময় ও পাবেন।
ক্লাউড কম্পিউটিং এর অসুবিধা:
১। আপনার তথ্য যদি ক্লাউডে রাখেন, তাহলে সেই তথ্যের গোপনীয়তা ভঙ্গের সম্ভাবনা থাকে। আপনার মহামুল্যবান তথ্য আরেক জনের হাতে তুলে দিচ্ছেন সে যে আপনার তথ্য নিয়ে গবেষণা করবে না তার কি গারান্টি আছে ? তবে সব কম্পনির ক্ষেত্রে এটা সঠিক নয়।
২। তথ্য করাপ্টেড হয়ে যেয়ে পারে নিমিষে।
৩। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নাও থাকতে পারে ।
৪। তথ্য ফাঁস হবার সম্ভাবনা।
ক্লাউড কম্পিউটিং এর কয়েকটি জনপ্রিয় অ্যাপ্লিকেশন এবং সার্ভিসঃ
Outright: হল একটি ফাইনান্স অ্যাপ্লিকেশন। এটা ছোট খাট বিজনেসের আকাউন্ট এর কাজে ব্যবহার করা হয়। বিজনেসের প্রফিট, লস, আয়, ব্যয় ইত্যাদির খরচ খুব সহজে করা যায়।
Google Apps; গুগল অ্যাপস অনেক সুবিধা দেয় যেমনঃ ডকুমেন্ট তরি করা, স্প্রেডশিড তৈরি, স্লাইড শো তৈরি, ক্যালেন্ডার মেইনটেন্স, পার্সোনাল ইমেইল ইত্যাদি তৈরি করার সুবিধা দেয়।
Evernote: প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন নোট সমূহ খুব সহজে কন্ট্রোল করা, ব্যবহার করা, যেকোনো স্থানে যেই নোট সমূহ ব্যবহার করাতে Evernote খুবই উপকারি।
Quickbooks; Quickbooks এক ধরনের একাউন্ট সার্ভিস। এর মাধ্যমে ক্যাশ নিয়ন্ত্রন করা, বাজেট তৈরি, বিজনেস রিপোর্ট তৈরি ইত্যাদির কাজে খুব ভাল সাপোর্ট দেয়।
Toggl; এটি একটি টাইম ট্র্যাকিং অ্যাপলিকেশন। মূলত প্রোজেক্ট কন্ট্রোল এবং টাইমিং এর জন্য এটা ব্যবহার করা হয়। প্রোজেক্ট তৈরিতে কত সময় লাগলো, কোন খাতে কতটুকু সময় সকল হিসাব এর মাধ্যমে জানা যায়।
Skype; Skype কম্পিউটার কে ফোনে রূপান্তর করে ফেলেছে। বিশ্বের যেকোনো স্থান থেকে কম্পিউটার এর মাধ্যমে কথা বলা, ভিডিও চ্যাট করা ইত্যাদির সুবিধা দিচ্ছে।
DropBox; অনেক দরকারি একটি সার্ভি স। ভার্চুয়াল হার্ডডিস্কও বলতে পারেন। মানে আপনি যেকোনো ধরনের ফাইল রাখতে পারবেন এবং সেটা যেকোনো পিসি থেকে কন্ট্রোল করতে পারবেন খুব সহজে। অন্যের সাথে শেয়ার করতে পারবেন।

mahbubmahi.blogspot.com এ প্রকাশিত।